বর্তমান সময়ের সুপরিচিত ও শ্রোতানন্দিত সংগীত শিল্পী দিঠি আনোয়ার। দিঠির আরেক পরিচয় তিনি কিংবদন্তি গীতিকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার এবং আশির দশকের টেলিভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান শুভেচ্ছা, আমন্ত্রণ, বৈঠকের উপস্থাপিকা জোহরা গাজীর মেয়ে। এক ভাই এক বোনের মধ্যে দিঠি ছোট। বাবা-গাজী মাজহারুল আনোয়ারের অনুপ্রেরণায় বেড়ে উঠেছেন সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। শৈশবে জনপ্রিয় সব সিনেমা শিল্পীরকোলে-পিঠে চড়ে মানুষ হয়েছেন দিঠি। ভাই-বোনের ছোট বেলার প্রিয় ছিল “সিনেমা-সিনেমা“ খেলা। ছয়-সাত বছর বয়সে বাবা-গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ছবিতে ছেলে চরিত্রে অভিনয় করলেও পরবর্তীকালে সংগীতকেই বেছে নিয়েছেন জীবনেরধ্যান-জ্ঞান হিসেবে।
দিঠি আনোয়ারের সংগীতে হাতেখড়ি ৮ বছর বয়সে। জন্মদিনে বাবার কিনে দেওয়া হারমোনিয়াম দিয়ে সারগাম শেখা শুরু। দীর্ঘদিন শাস্ত্রীয় সংগীত শিখেছেন ওস্তাদ ইয়াসিন হোসেন খানের কাছে। কিশোরী বয়সে ১৯৯৩ সালে “উল্কা” ছায়াছবিতে প্রথম প্লেব্যাক করেন। “মায়ের কোলে জন্ম নিলাম, বাবার কোলে বড় হলাম” শিরোনামের গানটির গীতিকবি তাঁর বাবা গাজী মাজহারুল আনোয়ার এবং সংগীত পরিচালনা করেন দেশের প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক সত্য সাহা। চলচ্চিত্রের গানের প্রতি ভীষণ দুর্বলতা আছে দিঠির। এখন পর্যন্ত ৬০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন তিনি।
বাবা গাজী মাজহারুল আনোয়ার যেহেতু ছিলেন একজন সিনেমা অন্তপ্রাণ মানুষ। তাই তাঁর মেয়ে হিসেবে চলচ্চিত্রের গানকে সবসময়ই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন তিনি। ভিকারুন্নিসানুন স্কুল ও কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স করেন দিঠি আনোয়ার। তাঁর দাম্পত্য সঙ্গী ব্যবসায়ী আরিফ চৌধুরী। এই দম্পতির ২ ছেলে- আদিয়ান চৌধুরী ও আকিব চৌধুরী।
দিঠি আনোয়ার হাঁটি হাঁটি পা পা করে সাংগীত জগতে ৩০ বছর পার করেছেন। রয়েছে ৪ টি একক ও অসংখ্য মিক্সড অ্যালবাম। একুশে পদক ও পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত গীতিকার বাবা গাজী মাজহারুল আনোয়ার, মেয়ে দিঠি আনোয়ারের জন্য ‘দিঠির খাতা’ নামে একটি খাতায় ১৭ টি মৌলিক গান রেখে গেছেন। ছোটবেলা থেকেই সিনেমার গান শুনে বড় হওয়া দিঠি কঠোর পরিশ্রম আর সাধনায় জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশর সংগীতাঙ্গনে, তৈরি করেছেন নিজস্ব পরিচয়। কিন্তু গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মেয়ে হিসেবে পরিচয় দিতেই গর্ববোধ করেন তিনি।